প্রকাশিত: ২২/০৯/২০১৮ ২:১৬ পিএম

 

ডেস্ক রিপোর্ট – এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিচারের মুখ দেখছে না মানবপাচারের ১৭০ মামলা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দেওয়া দুর্বল প্রতিবেদন, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রলোভনে সাক্ষীর গরহাজির থাকা এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের অবহেলার কারণে সারা দেশে এই ১৭০টি মামলার বিচারকাজ চলছে না। ফলে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় শ্রম রপ্তানির নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন যারা।

তাদের অনেকেই ভিটেমাটি পর্যন্ত খুইয়েছেন বিদেশে কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখে। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক ও মানবপাচার প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ ড. কাজী আলমগীর কবির আমাদের সময়কে বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে রাষ্ট্র যথেষ্ট আন্তরিক। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বা পাবলিক প্রসিকিউটর ও পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা যতদিন পর্যন্ত এ বিষয়ে আন্তরিক না হবেন, ততদিন মামলারও সুরাহা হবে না। কারণ অধিকাংশ মানবপাচারের

মামলায় আসামিরা তাদের সঙ্গে ‘বিশেষ’ সম্পর্ক রাখে। তাদের যোগসাজশেই সাক্ষীরা ঠিকমতো আদালতে হাজির হন না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, গত ১০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা মানবপাচার মামলাগুলোর বেশিরভাগই দায়ের করা হয়েছে রাজধানী ঢাকায়। প্রতারণার শিকার মানুষগুলোর মধ্যে অধিকাংশেরই গন্তব্য ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। কাজের অনুমতির ভিসা ছাড়াই স্রেফ পর্যটক ভিসায় কর্মস্থলে পাঠানো, বিদেশে পৌঁছে কাজ না পাওয়া এবং নতুন করে প্রতারণার খপ্পরে পড়া, কম বেতন প্রাপ্তি, নির্যাতন ইত্যাদির শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন এসব মামলার ভুক্তভোগীরা। তারা একপর্যায়ে দেশে ফিরে কিংবা বিদেশে অবস্থানকালেই স্বজনদের মাধ্যমে এসব মামলা করেছেন। এরপর মামলা চালাতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনসহ ঘাটে ঘাটে ফের অর্থ ব্যয় করছেন।

মানবাধিকার সংগঠন ‘রাইটস, যশোর’ এর নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, মানবপাচার মামলার অধিকাংশ সাক্ষী দরিদ্র হয়ে থাকেন। তারা একটা সময়ে কাজকাম রেখে সাক্ষ্য দিতে আদালতমুখীও হতে চান না। এছাড়া আসামিপক্ষও চেষ্টা করে সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাতে কিংবা আর্থিক প্রলোভনের মাধ্যমে হাজিরা থেকে বিরত রাখতে। পাবলিক প্রসিকিউটররাও অনেক সময় আসামিদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নিজে আদালতে দাঁড়ান না। জুনিয়র কোনো সহকর্মীকে দাঁড় করিয়ে দেন। এতে করে দরিদ্র মানুষগুলো একপর্যায়ে হতাশ হয়ে পিছু হটে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, মানবপাচার মামলার শম্বুকগতি নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচিতে প্রতিবেদন তুলে ধরছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপে পড়ছে বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় দ্রুত মানবপাচারের মামলা নিষ্পত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিচ্ছে। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি সভা হবে। সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, পুলিশের তদন্ত শাখা সিআইডি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। মানবপাচারের মামলাগুলো মনিটরিংসহ নিষ্পত্তিতে সহায়তা করতে কাজ করবে এই কমিটি।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...